কুকর: কুকুর কেন সারমেয়ে

ড. মোহাম্মদ আমীন

কুকুর কেন সারমেয়? এটি জানার আগে সারমেয় শব্দের অর্থটা জেনে নেওয়া যাক। বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানমতে, সংস্কৃত সারমেয় (সরমা+এয়) অর্থ (বিশেষ্যে) অপরাধী শনাক্তকরণ, মাদকদ্রব্য উদ্ধার, অকুস্থল বা রোগ নির্ণয় প্রভৃতি বিশেষায়িত কাজের জন্য প্রশিক্ষিত করা যায় এমন প্রখর ঘ্রাণশক্তিসম্পন্ন চতুষ্পদ মাংসাশী স্তন্যপায়ী মেরুদণ্ডী

পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.

প্রাণী, কুকুর, কুক্কুরী। অর্থাৎ সারমেয় মানে গোয়েন্দা কাজে লাগানো যায়— এমন কুকুর বা কুকুরী।

কিন্তু নামটা কেন সারমেয়?
.
এর উত্তর পাওয়া যায় ঋগ্‌বেদে।ঋগ্‌বেদ-এর দশম মণ্ডলের ১০৮ সূক্তে বর্ণিত আছে—পণি নামে পরিচিত একদল বিদেশি ডাকাত বা বেনে, একবার গোপনে এসে দেবতৃবৃন্দের কিছু গোরু ও অন্যান্য সম্পদ চুরি করে পালিয়ে যায়। দেবতৃবৃন্দ সম্পদের জন্য তেমন চিন্তাতুর ছিলেন না। তবে পোষা গোরু চুরি হয়ে যাওয়ায় তারা মর্মবেদনা অনুভব করছিলেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও হৃত গোরুর হদিস পাওয়া গেল না। অতঃপর হারানো গোরু খুঁজে বের করার জন্য এক কুক্কুরীকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ওই কুক্কুরীর নাম ছিল সরমা।
.
এই সরমা থেকে সারমেয় নামের উদ্ভব। সারমেয় শব্দের ব্যুৎপত্তিতেও তা লক্ষণীয়।সরমা অল্প সময়ের মধ্যে হারানো গোরুর সন্ধান পেয়ে যায়। সরমার সংবাদের ভিত্তিতে দেবতৃগণ হৃত সম্পদ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন। সে হতে সরমার উত্তর পুরুষরা গোয়েন্দা কাজে নিয়োজিত।
.
কথিত হয়, বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন সরকারি বাহিনী যে কুকুর-কুকুরী গোয়েন্দা বা নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করে থোকে তা ঋগ্‌বেদে বর্ণিত সরমজির উত্তর পুরুষ।এখনো মানুষ গোয়েন্দাগিরি করতে গিয়ে যে কাজ পারে না তা কুকুর-কুকুরী করে দেয়। এর দ্বারা আমি বলছি না যে, কুকুর-কুকুরী মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর। তবে, এমন অনেক কাজ আছে যা মানুষ পারে, কিন্তু কুকুর পারে না। যেমন: কুকুর কোনো অবস্থাতে কারো সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে না, মানুষ পারে এবং অহর্নিশ করে।
সূত্র: পৌরাণিক শব্দের উৎস ও ক্রমবিবর্তন, ড. মোহাম্মদ আমীন, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.

Leave a Comment

প্রত্যয়ন ও প্রত্যায়ন; বছর বনাম বয়স

ড. মোহাম্মদ আমীন

প্রত্যয়ন ও প্রত্যায়ন; বছর বনাম বয়স

প্রত্যয়ন’ ও ‘প্রত্যায়ন’ শব্দের সঙ্গে ‘প্রত্যয়’, ‘প্রত্যয়নপত্র’ ও ‘সত্যায়ন’ শব্দের নিবিড় আত্মীয়তা রয়েছে। ‘প্রত্যয়’ শব্দের অর্থ প্রতীতি, বিশ্বাস, নিশ্চয়াত্মক ধারণা, নিঃসন্দিগ্ধতা প্রভৃতি,

পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.

এটি বিশেষ্য সত্যায়ন’ শব্দের অর্থ হচ্ছে, সত্যতা নিশ্চিতকরণ, ইংরেজি পরিভাষায় attestation । এটি বিশেষ্য পদ। ‘প্রত্যয়নপত্র’ শব্দের অর্থ হচ্ছে, যে পত্রে কোনো দলিলের নির্ভুলতা প্রতিপাদন করা হয়। ‘প্রত্যয়িত’ শব্দের অর্থ, নির্ভুল বলে প্রতিপাদন করা হয়েছে এমন, সত্যায়িত, ইংরেজি পরিভাষায় attested. এটি বিশেষণ।

‘প্রত্যয়ন’ শব্দের অর্থ, নির্ভুল বলে প্রতিপন্নকরণ, সত্যায়ন প্রভৃতি। এর ইংরেজি পরিভাষা attestation। এটি বিশেষ্য। তাহলে, জেলাম্যাজিস্ট্রেটের সনদের একটি অংশ “এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, করিম সাহেবের বড়ো ছেলের নাম জাফর।” কথাটির অর্থ হবে : “এই ‘মর্মে নির্ভুল বলে প্রতিপন্নকরণ করা/ নিশ্চিতকরণ করা যাচ্ছে যে, করিম সাহেবের বড়ো ছেলের নাম জাফর।” এখানে ‘প্রত্যয়ন’ শব্দ দিয়ে সত্যতা নিশ্চিত করার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। যেমন : জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সনদ নিশ্চিত করলেন যে, করিম সাহেবের বড়ো ছেলের নাম জাফর।

‘প্রত্যায়ন’ শব্দের অর্থ প্রত্যয় উৎপাদন, বিশ্বাস সৃষ্টি, নিশ্চায়ত্মক ধারণা সৃষ্টি, নিঃসন্দিগ্ধতা উৎপাদন, সূচনা প্রভৃতি। শব্দটির ইংরেজি পরিভাষা attestation। এটিও বিশেষ্য। তাহলে,“এই মর্মে প্রত্যায়ন করা যাচ্ছে যে, করিম সাহেবের বড়ো ছেলের নাম জাফর।” কথাটির অর্থ হবে : “এই মর্মে প্রত্যয়ন/ বিশ্বাস উৎপাদন করা যাচ্ছে যে, করিম সাহেবের বড়ো ছেলের নাম জাফর।” এখানে সত্যতা উৎপাদন করার বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। যেমন : জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সনদ দেখে আমাদের এ বিশ্বাস উৎপাদন হলো যে, করিম সাহেবের বড়ো ছেলের নাম জাফর।

বছর বনাম বয়স

বছর: সংস্কৃত ‘বৎসর’ থেকে উদ্ভূত খাঁটি বাংলা শব্দ ‘বছর’ অর্থ (বিশেষ্যে) ১২ মাসব্যাপী কালপর্ব; ‘বৎসর’-এর চলিত রূপ। তিনি বাইশ বছর বাংলাদেশের বাইরে ছিলেন। ‘বছর’ শব্দের উচ্চারণ /বছোর্‌/।

বয়স: সংস্কৃত ‘বয়স্‌’ থেকে উদ্ভূত খাঁটি বাংলা শব্দ ‘বয়স’ অর্থ (বিশেষ্যে) কোনো ব্যক্তি বা প্রাণীর জন্মগ্রহণের পর থেকে তার আয়ুষ্কাল (তোমার বয়স কত?)। ২. আয়ুষ্কাল (যন্ত্রটির সম্ভাব্য আয়ুষ্কাল পঞ্চাশ বছর)। শব্দটি ‘বয়ঃপ্রাপ্তি’ অর্থ প্রকাশেও ব্যবহৃত হয়। শরীরে যৌন বৈশিষ্ট্যর উদ্ভব-সহ জননাঙ্গের সক্রিয় পরিস্ফুটনকালকে বয়ঃপ্রাপ্তি বলে। ‘বয়স’ শব্দের উচ্চারণ /বয়োশ্‌/।সাধারণ প্রয়োগ: তার বয়স এখন ত্রিশ বছর।

সূত্র: বাংলা ভাষা মজা, ড. মোহাম্মদ আমীন, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.

Leave a Comment

ইন্টারভিউ, সাক্ষাৎকার; ভাইভা, সাক্ষাৎগ্রহীতা, সাক্ষাৎদাতা; একটি ভাইভা

ড. মোহাম্মদ আমীন

ইন্টারভিউ, সাক্ষাৎকার; ভাইভা, সাক্ষাৎগ্রহীতা, সাক্ষাৎদাতা; একটি ভাইভা

ইন্টারভিউ (interview) অর্থ সাক্ষাৎকার। সাক্ষাৎকার অর্থ (বিশেষ্যে) ১. পরস্পর দর্শন ও কথাবার্তা, মৌখিক আলাপ। ২. পরস্পর কথোপকথন ও মতবিনিময়। যিনি সাক্ষাৎকার দেন বা সাক্ষাৎ প্রদানের জন্য যাকে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর কাছে উপস্থিত হতে হয় তাকে বলা হয় interviewer। বাংলায় সাক্ষাৎকারদাতা; সংক্ষেপে সাক্ষাৎদাতা। আর যিনি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন বা সাক্ষাৎকার প্রদানের জন্য সাক্ষাৎদাতাকে যার কাছে উপস্থিত হতে হয় তাকে বলা হয় interviewee। বাংলায় সাক্ষাৎকারগ্রহীতা; সংক্ষেপে সাক্ষাৎগ্রহীতা।

ভাইভা: ভাইভা ‘ভাইভা (viva) এমন এক প্রকৃতির পরীক্ষা যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীগণকে খাতায় লিখে উত্তর দেওয়ার পরিবর্তে বক্তৃতার মাধ্যমে বা মুখে বা মৌখিক আলাচারিতার মাধ্যমে কিংবা সাক্ষাৎকারগ্রহীতার ইচ্ছা অনুযায়ী অন্য কোনোভাবে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়।

ইন্টারভিউ
ড. মোহাম্মদ আমীন

আপনার বাবার নাম?
মৃত আবদুল খালেক।
‘মৃত’ কেন?
তিনি মারা গেছেন তাই।
আপনার গ্রামের প্রথম ডিগ্রিধারী ব্যক্তির নাম কী?
স্বর্গীয় রমণীমোহন আচার্য্য।
স্বর্গীয় কেন?
তিনি হিন্দু। হিন্দুরা মৃত হয় না, স্বর্গীয় হয়।
‘চোখের বালি’ উপন্যাসের লেখক কে?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
হয়নি।
‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের লেখক কে?
কাজী নজরুল ইসলাম।
হয়নি।
কী হবে?
স্বর্গীয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর মৃত কাজী নজরুল ইসলাম।
কেন?
তাঁরা মারা গেছেন তাই।

 

বিসিএস সমগ্র শুবাচ/২ #subach

‘জয় বাংলা’ কথাটি প্রথম কে লিখেছেন

কাজী নজরুল ইসলাম একটি কবিতায় প্রথম জয় বাংলা কথাটি লিখেন।ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা ও মদারীপুরের স্কুলশিক্ষক পূর্ণচন্দ্র দাসের কারামুক্তি উপলক্ষ্যে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। ওই সংবর্ধনা সভায় পাঠ করার জন্য কালিপদ রায় চৌধুরী কাজী নজরুল ইসলামকে একটি সংবর্ধনাসংগীত রচনার অনুরোধ করেন। অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে রচনা করেন পূর্ণ-অভিনন্দন নামের একটি কবিতা। কবিতাটি পরে ‘ভাঙার গান’ কাব্যগ্রন্থে স্থান পায়।
এই কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম প্রথম ‘জয় বাংলা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। ‘পূর্ণ-অভিনন্দন’ কবিতায় নজরুল লিখেছেন:
“জয় বাঙলা’র পূর্ণচন্দ্র, জয় জয় আদি অন্তরীণ,
জয় যুগে যুগে আসা সেনাপতি, জয় প্রাণ অন্তহীন।”
নজরুল রচিত ‘বাঙালির বাঙলা’ প্রবন্ধেও ‘জয় বাংলা’ কথার উল্লেখ রয়েছে।

Leave a Comment

প্রশ্নপত্রে ভুল: পিএসসির দায় কতটুকু; বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের নজিরবিহীন ভুল বানান

ড. মোহাম্মদ আমীন

প্রশ্নপত্রে ভুল: পিএসসির দায় কতটুকু; বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের নজিরবিহীন ভুল বানান

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত (২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে এপ্রিল) বিসিএস (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুলের কারণ ও পিএসসির দায় সম্পর্কে পিএসসির চেয়ারম্যান জনাব সোহরাব হোসাইনের সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল।
আলাপের এক পর্যায়ে তিনি বললেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়নের শুরু থেকে ছাপা পর্যন্ত কোনো পর্যায়ে কোনো বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের কেউ সম্পৃক্ত থাকেন না। থাকার সুযোগও নেই। নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী পিএসসি প্রশ্নকারীদের প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করার অনুরোধ করেন। মডারেটরগণ তা সংশোধন করেন। প্রশ্নকারী ও মডারেটরগণ প্রশ্নপত্র প্রণয়নের দায়িত্বে থাকেন। তাঁরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদগ্ধ শিক্ষক। এঁদের কেউ পিএসসির কর্মকর্তা নন। তাঁরা ৬ সেট প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে তা ছাপানোর জন্য সরাসরি বিজি প্রেসে পাঠিয়ে দেন। পরীক্ষার কয়েকদিন পূর্বে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিএস প্রেস হতে ৬ সেট প্রশ্নপত্র সিলগালা অবস্থায় গ্রহণ করেন। সংগৃহীত প্রশ্নপত্র উপযুক্ত স্থানে নিরাপদ ভল্টে সম্মিলিত জিম্মায় সংরক্ষণ করা হয়। পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আধ ঘণ্টা আগে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে লটারির বা দৈবচয়নের মাধ্যমে ৬ সেট প্রশ্নপত্র থেকে এক সেট প্রশ্নপত্র নির্বাচন করে। এরপর নির্বাচিত সেটের নাম বিভিন্ন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়। নির্বাচিত সেটের প্রশ্নই হলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট পূর্বে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হয়। তখনই আমাদের প্রশ্নপত্র দেখার সুযোগ হয় এবং জানতে পারি কোথায় কী রয়েছে। এর আগে আমাদের কারও প্রশ্নপত্র বিষয়ে কোনো কিছু দেখার বা জানার সুযোগ থাকে না। বরং আমাদের আগে পরীক্ষার্থীগণ প্রশ্নপত্র পেয়ে যান। সুতরাং, বুঝতেই পারছেন, প্রশ্নপত্রের ভুল বা অসংগতিতে পিএসসির সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই কিছু করারও নেই।
“আপনাদের কি আসলেই কিছু করার নেই?” আমার প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান মহোদয় বললেন, প্রশ্নকর্তা ও মডারেটগণকে আমরা আরও সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করতে পারি। তৃতীয় কোনো পক্ষকে দেখাতে গেলে গোপনীয়তাসংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে। প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়। ভুলত্রুটি কাম্য নয়; তবু বাধ্য হয়ে কিছুটা মেনে নেওয়া গেলেও গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিষয়টি একবিন্দুও মেনে নেওয়া যায় না। তাই অনেক সতর্ক থাকার পরও কিছু ত্রুটি থেকে যায়। এ বিষয়ে আমরা আরও সতর্ক থাকার তাগিদ অনুভব করছি এবং থাকব।

 বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল বানান

২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কিছু ভুল বানান ও অসংগতি নিচে দেওয়া হলো। 
শুদ্ধীকরণ:
কোডঃকোড: [বিসর্গ (ঃ) যতিচিহ্ন নয়। তাই যতিচিহ্ন বা সংক্ষেপণে কোলনের (:_ পরিবর্তে বিসর্গ বিধেয় নয়। বিসর্গ দিলে কোডঃ কথার উচ্চারণ হবে কোডোহ্‌।]
৪ ঘন্টা> ৪ ঘণ্টা (ণত্ববিধিমতে ঘণ্টা বানানে মূর্ধন্য-ণ অপরিহার্য।)
প্রবাল দ্বীপ এরপ্রবাল দ্বীপের/ প্রবাল দ্বীপ-এর (ষষ্ঠী বিভক্তি সেঁটে বসে; আবশ্যকীয় ক্ষেত্রে ‘এর’ বসাতে হলে আগে হাইফেন অনিবার্য।)
গুরুত্ব কি ?গুরুত্ব কী? (ব্যাখ্যা-কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নজ্ঞাপনে সর্বনাম পদ ‘কী’ অপরিহার্য। যতিচিহ্নের পূর্বে ফাঁক পরিহার্য। প্রশ্নবোধক চিহ্নের আগে ফাঁক রাখা হয়েছে। যা বিধেয় নয়।)
 ব-দ্বীপ সমূহব-দ্বীপসমূহ (পদাশ্রিত নির্দেশক সেঁটে বসে।)
কি বুঝেন ? > কী বুঝেন? (‘কি’ সংশয়সূচক প্রশ্নবাচক পদ; যার উত্তর হ্যাঁ কিংবা না। এখানে হ্যাঁ কিংবা না দিয়ে উত্তর দেওয়া যাবে না। অতএব, সর্বনাম ‘কী’ আবশ্যক।)
 যাদুঘরজাদুঘর
যাদুঘর এরজাদুঘরের
শহীদ মিনারশহিদ মিনার (অতৎসম শব্দে ঈ-কার পরিহার্য।)
গুরুত্ব কি ? > গুরুত্ব কী? (‘কি’ সংশয়সূচক প্রশ্নবাচক পদ; যার উত্তর হ্যাঁ কিংবা না। এখানে হ্যাঁ কিংবা না দিয়ে উত্তর দেওয়া যাবে না। অতএব, সর্বনাম ‘কী’ আবশ্যক।)
বাঙ্গালীবাঙালি
ভাষা আন্দোলন এরভাষা আন্দোলনের
গণঅভ্যুত্থান এর > গণঅভ্যুত্থানের
কি বুঝেন ? > কী বুঝেন? (‘কি’ সংশয়সূচক প্রশ্নবাচক পদ; যার উত্তর হ্যাঁ কিংবা না। এখানে হ্যাঁ কিংবা না দিয়ে উত্তর দেওয়া যাবে না। অতএব সর্বনাম ‘কী’ আবশ্যক।)
মূলনীতিগুলি কি কি ? > মুলনীতি কী কী?/ মূলনীতিগুলো কী? (একই পদের জন্য একই সঙ্গে দুটি বহুবচন পরিহার্য। ‘-গুলো’ আর ‘কী কী’ দুটোই বহুবচনজ্ঞাপক। তাই ‘গুলো’ দিলে বহুবচনজ্ঞাপক দুটো ‘কী কী’ বাহুল্য। )
অধিকারসমূহ কি কি ?> অধিকারসমূহ কী?/অধিকার কী কী?
 বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ অনুসারে ব্যাখ্যা করুনবাংলাদেশের সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ অনুসারে ব্যাখ্যা করুন (বাক্যটির শব্দচয়ন সঠিক হয়নি)

বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল বানান

২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১লা সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ৩৬তম বিসিএস পরীক্ষার ইংরেজি বিষয়ের প্রশ্নপত্রে ইংরেজি অনুবাদ করার জন্য নির্ধারিত বাংলা অনুচ্ছেদের কিছু ভুল বানান ও অসংগতি বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বানানবিধি অনুসারে নিচে তুলে ধরা হলো। আমার চিহ্নিত প্রতিটি ভুলের সঙ্গে সবাই একমত নাও হতে পারেন। মন্তব্য থাকলে দেবেন। ঋদ্ধ হতে পারব। দ্বিমতই মতকে শক্তিশালী করে। অধিকন্তু, আমারও ভুল হতে পারে। দেখিয়ে দেবেন। লেখাটি পরিশুদ্ধ হবে।

শুদ্ধীকরণ:

শুধুমাত্রশুধু/মাত্র (‘শুধুমাত্র’ শব্দটি সিদ্ধ প্রয়োগ বিবেচনায় বিতর্কিত। অনেকের কাছে অশুদ্ধ প্রয়োগ হিসেবে চিহ্নিত।)
বাঙালীর অন্তরের> বাঙালির অন্তরের (বাঙালি বানানে ই-কার)
বহ্নি শিখারবহ্নি শিখার (অভিধানভুক্ত শব্দ, একশব্দে লেখা হয়। আমি দূরন্ত বৈশাখী ঝড়, তুমি যে বহ্নিশিখা )
বহ্নি শিখার নাম> বহ্নিশিখা (বহ্নিশিখার কোনো নাম দেওয়া হয়নি)
.
বাঙালীর গৌরব> বাঙালির গৌরব
বাঙালীর গৌরব আর গর্ব > বাঙালির গৌরব/গর্ব ( গৌরব আর গর্ব সমার্থক, গৌরব অর্থই গর্ব। একসঙ্গে দুটি বাহুল্য)
বাঙালীর চেতনা> বাঙালির চেতনা
বাঙালীর ইস্পাতকঠিন> বাঙালির ইস্পাতকঠিন
.
বাঙালীর অনুপ্রেরণা> বাঙালির অনুপ্রেরণা
বাঙালীর শানিত> বাঙালির শানিত
সব কিছুসবকিছু (অভিধানমতে, এটি একক শব্দ।)
কেননা> কেননা, [ কেননা পদের পর যতিচিহ্ন হিসেবে কমা (,) বাঞ্ছনীয়]
.
জাতিসত্ত্বার ভিত্তি> জাতিসত্তার ভিত্তি (জাতিসত্তা বানানের ত্ত-ধ্বনির নিচে অন্তস্থ-ব পরিহার্য)
ভীষণভাবে আপ্লুত করে > দারুণভাবে আপ্লুত করে (ভীষণভাবে সাধারণত নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার করা হয়।)
মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিতমুক্তিযুদ্ধসম্পর্কিত/ মুক্তিযুদ্ধ-সম্পর্কিত
লক্ষ্য করা যায়> লক্ষ করা যায় (লক্ষ্য অর্থ উদ্দেশ্য, লক্ষ অর্থ দেখা)
.
যে জানতে চায়> সে জানতে চায় (এখানে পূর্ব ও পরের বাক্য বিবেচনায় ‘সে’ হয়)
নিজ জাতিসত্ত্বারনিজ জাতিসত্তার
উদ্বুদ্ধ করে> দ্‌ পৃথক থাকা বিধেয় ছিল।
৭১ এর৭১-এর (ষষ্ঠী বিভক্তি সেঁটে বসে বা হাইফেন নিয়ে বসে। হাইফেন ছাড়া ‘এর’ লিখলে অর্থ হয়ে যায়: তার, তাহার, ইহার)
.
একুশের বইমেলা> অমর একুশে গ্রন্থমেলা ( ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে নাম ছিল ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে হয়েছে অমর একুশে বইমেলা।)
স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসেস্বাধীনতা দিবসে ও বিজয় দিবসে ( পৃথক দুটি দিবস, পৃথক দুটি নাম। স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে বললে একই দিবস বুঝায়। হাসিবুর রহমান ও করিমুর রহমান নামের দুই ব্যক্তিকে হাসিবুর ও করিমুর রহমান কথা দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। তাহলে একজন তার পূর্ণনাম হারায়। )
শহীদ মিনার> শহিদ মিনার ((শহিদ বিদেশি শব্দ, বানানে ঈ-কার পরিহার্য)
৭১ এর৭১-এর

বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন: সরকারী বানানে এখনো ঈ-কার কেন

বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল শুদ্ধীকরণ: বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল কারণ ও প্রতিকার

বিসিএস ৪৬তম (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল ও শুদ্ধীকরণ: প্রশ্ন নং ১ থেকে ৩০

#subach

Leave a Comment

বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন: সরকারী বানানে এখনো ঈ-কার কেন

ড. মোহাম্মদ আমীন

বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন: সরকারী বানানে এখনো ঈ-কার কেন

‘বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম’ পুস্তিকার ২নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে সকল অতৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশি, বিদেশি, মিশ্র শব্দে কেবল ই এবং উ এবং এদের কারচিহ্ন ি  ‍ু ব্যবহৃত হবে। সরকারিফারসি উৎসের শব্দ। তাই বর্ণিত বিধি অনুযায়ী ‘সরকারি’ বানানে ঈ-কার পরিহার্য। কিন্তু ‘বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন’ নামটিতে ‘সরকারি’ বানান লেখা হয়েছে ঈ-কার দিয়ে ‘সরকারী’। 

ফারসি সরকার থেকে সরকারি। সুতরাং ‘সরকারি’ অতৎসম শব্দ। 
বিদেশি বা অতৎসম শব্দে সাধারণত ই বা ই-কার হয়; ঈ বা ঈ-কার হয় না। 
তাই সরকারি বানানে ই-কার। অন্যদিকে, সহকারী (সহ+√কৃ+ইন্‌) তৎসম বা সংস্কৃত শব্দ। 
তাই সংস্কৃত ব্যাকরণমতে, বানানটিতে ঈ-কার হয়েছে।

গতকাল (২৯শে এপ্রিল, ২০২৪) পিএসসির চেয়ারম্যান মহোদয়ের সঙ্গে  সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিসিএস (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল, কারণ ও প্রতিকার

ড. মোহাম্মদ আমীন

নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। প্রসঙ্গক্রমে চেয়ারম্যান মহোদয়কে বললাম, স্যার, পরীক্ষার্থীরা পিএসিসির সাইনবোর্ডে দেখে ‘সরকারী’, কিন্তু পরীক্ষার খাতায় শুদ্ধ লিখতে হয় ‘সরকারি’। এটি বিভ্রান্তিকর। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। একটি ভাষা নিয়ে এমন সাংঘর্ষিকতা পরিত্যাজ্য। বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুযায়ী বানানটি পরিবর্তন করা উচিত। এ বিষয়ে আপনি উদ্যোগ নিতে পারেন। এটি আপনার জন্য একটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে। 

তিনি বললেন, উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। আইন মন্ত্রণালয় রাজি হয়নি। তাদের অভিমত, ‘ বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন’ একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিষ্ঠানটির নামের বানানে ‘সরকারী’ লেখা রয়েছে ঈ-কার দিয়ে ‘বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন’। সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। তাই  গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে বানানটি (সরকারী) পরিবর্তন না-হওয়া অবধি ‘বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন’-এর নামের ‘সরকারী’ বানান পরিবর্তন করে ‘সরকারি’ করার কোনো সুযোগ নেই।

‘বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম’ পুস্তিকার ৪নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ব্যক্তি, 
প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার নাম প্রমিত বাংলা বানানের নিয়মের আওতাভুক্ত নয়। তাই বানান পরিবর্তন 
না হলেও বিষয়টি নাম হিসেবে মেনে নেওয়া যায়। যদিও পরিবর্তন হলে আদর্শ মান রক্ষিত হতো।
ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামের বানান ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠান যেমন নির্ধারণ করেন বা রাখেন ঠিক তেমনই হবে; এখানে কোন ভুল নেই- এ দাবি প্রমিত বানান রীতি অনুযায়ী ঠিক। তবে, একটি কথা মনে রাখা দরকার, ভাষান্তরে কখনও নামের পরিবর্তন হয় না। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম যে ভাষায় রূপান্তর করা হোক না কেন অভিন্ন থাকে। এবার দেখা যাক, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখা ‘সরকারী’ বানানটি কী প্রতিষ্ঠানের নাম, না অশুদ্ধ বানান।
কর্তৃপক্ষ কলেজের নাম লিখেছেন ‘গাছবাড়ীয়া সরকারী কলেজ’। আমি বলি এখানে ‘সরকারী’ শব্দটি ভুল বানানে লেখা হয়েছে। অনেকে বলবেন, যেহেতু এটি নাম তাই কর্তৃপক্ষ যেভাবে লিখেছেন সেটিই শুদ্ধ বিবেচিত হবে। কর্তৃপক্ষের দেয়া নামকরণ দাবি ঠিক হলে ‘গাছবাড়ীয়া সরকারী কলেজ’ এর ইংরেজি অনুবাদ হবে ‘Gasbaria Sarkari College’. কারণ নাম ভাষা-নির্বিশেষে অপরিবর্তিত থাকে। কিন্তু ‘গাছবাড়ীয়া সরকারী কলেজ’ এর ইংরেজি অনুবাদ যদি ‘Gasbaria Government College’ করা হয় তাহলে ধরে নিতে হবে ঐটি নাম নয়, শব্দ। সুতরাং ‘সরকারী’ লেখা বিধেয় হয়নি। লিখতে হবে ‘সরকারি’। কারও নাম ‘লাল চন্দ্র দাস’ হলে তিনি ইংরেজিতেও ‘Lal Chandra Das’ লিখেন; কখনও Red Moon Servant লিখেন না। তাই ইংরেজি অনুবাদে যদি ‘সরকারী’ শব্দকে ‘Government’ লেখা হয় তো ধরে নিতে হবে এটি নাম নয়, সরকারি শব্দের অশুদ্ধ বানান।

বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল শুদ্ধীকরণ: বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল কারণ ও প্রতিকার

#subach

Leave a Comment

বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল শুদ্ধীকরণ: বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল কারণ ও প্রতিকার

ড. মোহাম্মদ আমীন

বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল শুদ্ধীকরণ: বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল কারণ ও প্রতিকার

২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র (সেট নং ৪) থেকে।

সবুজ রঙের লেখা দিয়ে উত্তর চিহ্নিত করা হয়েছে।

১৬৬. প্রশ্ন: বাংলা ভাষায় কোন স্বরধ্বনি উচ্চারণকালে জিহ্বা উচ্চ অবস্থানে থাকে?
(ক) আ
(খ) এ
(গ) উ
(ঘ) ও
.
১৬৭. প্রশ্ন: বাংলা শব্দ ভাণ্ডারে অনার্য জাতির ব্যবহৃত শব্দ—
(ক) তৎসম
(খ) তদ্ভব
(গ) দেশি
(ঘ) বিদেশি
শুদ্ধীকরণ:
ভাণ্ডারে> ভান্ডারে [শব্দটির বানানে ‘ণ’ হবে না। ‘ন’ হবে।] 
১৬৮. প্রশ্ন: ‘ধ্বনি বিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব’ গ্রন্থের রচয়িতা—
(ক) মুহম্মদ আবদুল হাই
(খ) মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
(গ) মুনীর চৌধুরী
(ঘ) মুহম্মদ এনামুল হক
.
১৬৯. প্রশ্ন: বাংলা বর্ণমালার যৌগিক স্বর কয়টি?
(ক) ১টি।
(খ) ২টি।
(গ) ৩টি
(ঘ) ৪টি
.
১৭০. প্রশ্ন: যোগরুঢ় শব্দ কোনটি?
(ক) কলম
(খ) মলম
(গ) বাঁশি
(ঘ) শাখামৃগ
শুদ্ধীকরণ: 
যোগরুঢ়> যোগরূঢ়
.
১৭১. প্রশ্ন: উপসর্গযুক্ত শব্দ—
(ক) বিদ্যা
(খ) বিদ্রোহী
(গ) বিষয় 
(ঘ) বিপুল 
বিদ্রোহী= বি+দ্রোহ+ইন্=বি+দ্রোহী; ‘বি’ একটি উপসর্গ। বিদ্রোহী’ উপসর্গযুক্ত শব্দ।
বিষয়= বি+√সি+অ= বি+ষয়; ‘বি’ একটি উপসর্গ। বিষয়’ উপসর্গযুক্ত শব্দ।
বিপুল= বি+√পুল্‌+অ= বি+পুল; ‘বি’ উপসর্গ। ‘বিপুল’ উপসর্গযুক্ত শব্দ।
বিকল্প উত্তরের মধ্যে তিনটি, যথাক্রমে বিদ্রোহী, বিষয় ও বিপুল উপসর্গযুক্ত শব্দ।
১৭২. প্রশ্ন: বিভক্তিযুক্ত শব্দ কোনটি?
(ক) সরোবরে 
(খ) চশমা
(গ) সরোজ
(ঘ) চম্পক
.
১৭৩. প্রশ্ন: কোনটি প্রত্যয়সাধিত শব্দ?

(ক) ভাইবোন
(খ) রাজপথ
(গ) বকলম
(ঘ) ঐকিক
এক+ইক; ইক-প্রত্যয় যুক্ত হয়েছে।
১৭৪. প্রশ্ন: শিরশ্ছেদ শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ—
(ক) শির+ছেদ
(খ) শিরঃ+ছেদ
(গ) শিরশ্+ছেদ
(ঘ) শির+উচ্ছেদ
দ্র.শিরস্‌+ছেদ= শিরশ্ছেদ শিরঃ (-রস্)
১৭৫. প্রশ্ন: ‘নীলকর’ কোন সমাসের দৃষ্টান্ত?
(ক) দ্বন্ধ
(খ) বহুব্রীহি
(গ) নিত্য
(ঘ) উপপদ তৎপুরুষ
.
১৭৬. প্রশ্ন: ‘Pedagogy’ শব্দের পরিভাষা—
(ক) সহশিক্ষা
(খ) নারীশিক্ষা
(গ) শিক্ষাতত্ত্ব
(ঘ) শিক্ষানীতি
১৭৭. প্রশ্ন: ‘বঙ্কিম’ এর বিপরীত শব্দ কোনটি?
(ক) বন্ধুর
(খ) অসম
(গ) সুষম
(ঘ) ঋজু
শুদ্ধীকরণ:  
‘বঙ্কিম’ এর> ‘বঙ্কিম’-এর . 

১৭৮. প্রশ্ন: বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম কত সালে প্রণীত হয়?
ক) ১৯৯০
খ) ১৯৯২
(গ) ১৯৯৪
(ঘ) ১৯৯৬

শুদ্ধীকরণ:
বাংলা একাডেমির ‘প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম’> ‘বাংলা একাডেমির প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম’

১৭৯. প্রশ্ন: কোন বানানটি শদ্ধ?
(ক) মুলো
(খ) মুলা
(গ) ধুলি
(ঘ) ধূলো

শুদ্ধীকরণ:
শদ্ধ> শুদ্ধ/অশুদ্ধ
প্রশ্নের চারটি বিকল্প উত্তরের মধ্যে ‘মুলো’ ও ‘মুলা’ উভয় বানান শুদ্ধ। 
অন্যদিকে, ‘ধুলি’ ও ‘ধূলো’ উভয় বানান অশুদ্ধ। অথচ অথচ প্রশ্নপত্রের 
প্রথম পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, “প্রতিটি প্রশ্নের ৪টি উত্তরের মধ্যে ১টি সঠিক
উত্তর রয়েছে। কিন্তু এখানে সঠিক উত্তর দুটি। অশুদ্ধ উত্তরও দুটি।

১৮০. প্রশ্ন: ‘নদী’-র সমার্থ শব্দ কোনটি?
(ক) সিন্ধু
(খ) হিল্লোল
(গ) তটিনী
(ঙ) নির্ঝর

১৮১. প্রশ্ন: চর্যাপদের কবিরা ছিলেন—
(ক) মহাঘানী বৌদ্ধ
(খ) বজ্রঘানী বৌদ্ধ
(গ) বাউল
(ঘ) সহজঘানী বৌদ্ধ

শুদ্ধীকরণ: 
মহাঘানী> মহাযানী
বজ্রঘানী> বজ্রযানী
সহজঘানী> সহজযানী
দুটি বিকল্প সঠিক। মহাযানী ও সহজযানী। তবে সর্বাধিক সঠিক সহজযানী

১৮২.প্রশ্ন: শূন্যপূরাণের রচয়িতা—
(ক) রামাই পন্ডিত
(খ) হলায়ূধ মিশ্র
(গ) কাহ্ন
(ঘ) কুক্কুরীপা

শুদ্ধীকরণ:
পন্ডিত> পণ্ডিত [পণ্ডিত বানানে মূর্ধন্য-ণ অপরিহার্য।]

১৮৩. প্রশ্ন: বাংলাসাহিত্যের ইতিহাসে কাঁকিল্যা গ্রাম কেন উল্লেখযোগ্য?
(ক) শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মস্থান
(খ) বড়ুচণ্ডীদাসের জন্মস্থান
(গ) চর্যাপদের প্রাপ্তিস্থান
(ঘ) শ্রীকৃষ্ণকীর্ত্তন কাব্যের প্রাপ্তিস্থান

শুদ্ধীকরণ:
কাঁকিল্যা গ্রাম> ‘কাঁকিল্যা গ্রাম’
১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামের 
দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘর থেকে এই কাব্য আবিষ্কার করেন।

১৮৪. প্রশ্ন: যেসব বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি— কবিতাটি কোন কাব্যের অন্তর্গত—
(ক) নূরনামা
(খ) নসিহতনামা
(গ) মধুমালতী
(ঙ) ইউসুফ-জুলেখা

১৮৫. প্রশ্ন: আলাওল কোন শতাব্দীর কবি?
(ক) পঞ্চদশ
(খ) ষোড়শ
(গ) সপ্তদশ
ঘ) অষ্টাদশ

১৮৬. প্রশ্ন: কোন বাংলা গানকে ইউনেস্কো Heritage of Humanity অভিধায় ভূষিত করেছে?
(ক) রবীন্দ্র সংগীত
(খ) নজরুল সংগীত
(গ) ভাটিয়ালি গান
(ঘ) বাউল গান

শুদ্ধীকরণ: 
Heritage of Humanity> ‘Heritage of Humanity’। 
রবীন্দ্র সংগীত> রবীন্দ্রসংগীত [বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান, পৃষ্ঠা: ১১৬৬]
নজরুল সংগীত>নজরুলসংগীত [বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান, পৃষ্ঠা: ৭১০]
ভাটিয়ালি গান> ভাটিয়ালি [ভাটার টানে নৌকা চালানোর সময় বাংলাদেশের মাঝিরা যে
সুরে গান গায়, নদীবহুল অঞ্চলের লোকগীতি। বাএআবাঅ, পৃষ্ঠা: ১০৪১]
বাউল গান> বাউলগান [বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান, পৃষ্ঠা: ৯৩৫ পৃষ্ঠা]

১৮৭. প্রশ্ন: চন্ডীচরণ মুন্সী কে?
(ক) শ্রীরামপুর মিশনের লিপিকর
(খ) ফোর্ড উইলিয়াম কলেজের পণ্ডিত
(গ) কেরী সাহেবের মুন্সী গ্রন্থের রচয়িতা
(ঘ) সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার সম্পাদক

শুদ্ধীকরণ:
চন্ডীচরণ> চণ্ডীচরণ
কেরী সাহেবের মুন্সী গ্রন্থের রচয়িতা> ‘কেরী সাহেবের মুন্সী’ গ্রন্থের রচয়িতা
সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার সম্পাদক> ‘সমাচার চন্দ্রিকা’ পত্রিকার সম্পাদক
একই প্রকৃতির অনেক নামে একক-উদ্ধৃতিচিহ্ন দেওয়া হয়েছে। 

১৮৮. প্রশ্ন: ‘রত্নপরীক্ষা’ গ্রন্থের রচয়িতা—
(ক) রামমোহন রায়
(খ) অক্ষয় কুমার দত্ত
(গ) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(ঘ) রাধানাথ শিকদার

যোগেশচন্দ্র রায়-এর লেখা একটি গ্রন্থ আছে, নাম রত্নপরীক্ষা। প্রকাশ: ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দ।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘রত্নপরীক্ষা’ গ্রন্থের রচনাকাল ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দ। 

১৮৯. প্রশ্ন: স্বর্ণকুমারী দেবীর পিতার নাম—
(ক) দ্বারকানাথ ঠাকুর
(খ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(গ) রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(ঙ) প্রমথ চৌধুরী

১৯০. প্রশ্ন: ভীষ্মদেব খোশনবীশ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কোন গ্রন্থের চরিত্র?
(ক) কমলাকান্ত
(খ) লোকরহস্য
(গ) মুচিরামগুড়ের জীবনচরিত
(ঘ) যুগলাঙ্গুরীয়

১৯১. প্রশ্ন: দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদক—
(ক) জশুয়া মার্শম্যান
(খ) ডেভিড হেয়ার
(গ) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(ঙ) মাইকেল মধুসূদন দত্ত

 শুদ্ধীকরণ:
 অনেকের ধারণা, নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। 
তা আদৌ সঠিক নয়।  আধুনিক গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, 
‘Nil Durpan, or The Indigo Planting Mirror’ নামে এর অনুবাদ প্রকাশ করেছিলেন
রেভারেন্ড জেমস লঙ। এই অনুবাদ প্রকাশিত হবার পর জেমস লঙের 
জরিমানা ও কারাদণ্ড হয়। কালীপ্রসন্ন সিংহ জরিমানার টাকা আদালতেই 
পরিশোধ করে দেন। প্রসঙ্গত, এটিই প্রথম বাংলা নাটক যা ইংরেজিতে অনূদিত হয়।

১৯২. প্রশ্ন: রঞ্জন চরিত্রটি রবীন্দ্রনাথের কোন নাটকের রচনা?
(ক) বিসর্জন
(খ) রক্তকরবী
(গ) মুক্তধারা
(ঘ) ডাকঘর

শুদ্ধীকরণ:
রঞ্জন> ‘রঞ্জন’

১৯৩. প্রশ্ন: তৈল প্রবন্ধটি লিখেছেন—
(ক) সুকুমার রায়
(খ) রমেশচন্দ্র মজুমদার
(গ) শিবনারায়ণ রায়
(ঘ) হরপ্রসাদ শাস্ত্রী

১৯৪. প্রশ্ন: “নাম রেখেছি কোমল গান্ধার” কাব্যের রচয়িতা—
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(খ) বিষ্ণু দে
(গ) অমিয় চক্রবর্তী
(ঘ) প্রেমেন্দ্র মিত্র

১৯৫. প্রশ্ন: ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’’ গানটি রচয়িতা—
(ক) কাজী নজরুল ইসলাম
(খ) গোলাম মোস্তফা
(গ) জসীমউদ্‌দীন
(ঘ) আব্বাস উদ্দীন আহমেদ

১৯৬. প্রশ্ন: শামসুর রাহমানের রচিত উপন্যাস—
(ক) পতঙ্গ পিঞ্জর
(খ) প্রেম একটি লাল গোলাপ
(গ) রোদ্র করোটিতে
(ঘ) অদ্ভুত আঁধার এক

‘অদ্ভুত আঁধার এক’ প্রথম প্রকাশ ১৯৮৫।

১৯৭. প্রশ্ন: সেলিম আল দীনের নাটকে অনুসৃত শিল্পতত্ত্ব—
(ক) অস্তিত্ববান
(খ) অতিব্যক্তিবান
(গ) পরাবস্তববান
(ঘ) দ্বৈতাদ্বৈতবাদ

১৯৮. প্রশ্ন: ‘পৃথক পালঙ্ক’ কাব্যগ্রন্থের কবি —
(ক) আল মাহমুদ
(খ) রফিক আজাদ
(গ) আবুল হাসান
(ঘ) আবুল হোসেন

১৯৯. প্রশ্ন: কোন গল্পকারের গল্পে ম্যাজিক রিয়েলিজমের প্রতিফলন ঘটেছে?
(ক)  জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত
(খ) রিজিয়া রহমান
(গ) শহীদুল জহির
(ঘ) দিলারা হাশেম

২০০. প্রশ্ন: ‘‘একুশ মানে মাথানত না করা’’ — এই অমর পঙ্‌ক্তির রচয়িতা—
(ক)  আবদুল গাফফার চৌধুরী
(খ) আবুল ফজল
(গ) মুনীর চৌধুরী
(ঘ) সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

শুদ্ধীকরণ:
গাফফার> গাফ্‌ফার

২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের (কপোতাক্ষ, সেট নম্বর ৩) ৮৭ ও ৮৯ নম্বর প্রশ্নের ভুল/অসংগতি ‘বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম’ পুস্তিকা ও ‘বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান’ অনুযায়ী চিহ্নিত করা হলো।এছাড়াও প্রশ্নপত্রটিতে রয়েছে আরো অনেক ভুল। ‘সরকারী কর্মকমিশন’-এর মতো একটি প্রতিষ্ঠানের এমন ভুল ও অসংগতি রীতিমতো অবিশ্বাস্য।

  • বঙ্কিম এর> ‘বঙ্কিম’-এর/ ‘বঙ্কিম’-র [একই ধরনের শব্দের জন্য ৯০নং প্রশ্নে হাইফেন (-) ব্যবহার করা হয়েছে। ‘দ্রষ্টব্য’ দেখুন।]
  • শদ্ধ> শুদ্ধ/অশুদ্ধ [বাক্য/প্রশ্নের ধরন বিবেচনায়]
  • ধুলি> ধূলি [বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান, পৃষ্ঠা: ৭০২]
  • ধূলো> ধুলো বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান, পৃষ্ঠা: ৭০১]
দ্রষ্টব্য: ‘এর’ ষষ্ঠী বিভক্তি। এটি সাধারণত ‘র’ ধ্বনি হয়ে সংশ্লিষ্ট পদের সঙ্গে সেঁটে বসে। বিশেষ কারণে ‘র’ ধ্বনিকে ‘এর/র’ বানানে মূল পদ হতে পৃথক রাখতে হলে আগে হাইফেন (-) অপরিহার্য। নইলে ‘এর’ অর্থ হয়ে যায় (বিশেষণে) তাহার, তার, ইহার, এটির।]
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত (২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে এপ্রিল) বিসিএস (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুলের কারণ ও পিএসসির দায় সম্পর্কে পিএসসির চেয়ারম্যান জনাব সোহরাব হোসাইনের সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল।
আলাপের এক পর্যায়ে তিনি বললেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়নের শুরু থেকে ছাপা পর্যন্ত কোনো পর্যায়ে কোনো বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের কেউ সম্পৃক্ত থাকেন না। থাকার সুযোগও নেই। নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী পিএসসি প্রশ্নকারীদের প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করার অনুরোধ করেন। মডারেটরগণ তা সংশোধন করেন। প্রশ্নকারী ও মডারেটরগণ প্রশ্নপত্র প্রণয়নের দায়িত্বে থাকেন। তাঁরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদগ্ধ শিক্ষক। এঁদের কেউ পিএসসির কর্মকর্তা নন। তাঁরা ৬ সেট প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে তা ছাপানোর জন্য সরাসরি বিজি প্রেসে পাঠিয়ে দেন। পরীক্ষার কয়েকদিন পূর্বে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিএস প্রেস হতে ৬ সেট প্রশ্নপত্র সিলগালা অবস্থায় গ্রহণ করেন। সংগৃহীত প্রশ্নপত্র উপযুক্ত স্থানে নিরাপদ ভল্টে সম্মিলিত জিম্মায় সংরক্ষণ করা হয়। পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আধ ঘণ্টা আগে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে লটারির বা দৈবচয়নের মাধ্যমে ৬ সেট প্রশ্নপত্র থেকে এক সেট প্রশ্নপত্র নির্বাচন করে। এরপর নির্বাচিত সেটের নাম বিভিন্ন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়। নির্বাচিত সেটের প্রশ্নই হলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট পূর্বে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হয়। তখনই আমাদের প্রশ্নপত্র দেখার সুযোগ হয় এবং জানতে পারি কোথায় কী রয়েছে। এর আগে আমাদের কারও প্রশ্নপত্র বিষয়ে কোনো কিছু দেখার বা জানার সুযোগ থাকে না। বরং আমাদের আগে পরীক্ষার্থীগণ প্রশ্নপত্র পেয়ে যান। সুতরাং, বুঝতেই পারছেন, প্রশ্নপত্রের ভুল বা অসংগতিতে পিএসসির সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই কিছু করারও নেই।
“আপনাদের কি আসলেই কিছু করার নেই?” আমার প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান মহোদয় বললেন, প্রশ্নকর্তা ও মডারেটগণকে আমরা আরও সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করতে পারি। তৃতীয় কোনো পক্ষকে দেখাতে গেলে গোপনীয়তাসংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে। প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়। ভুলত্রুটি কাম্য নয়; তবু বাধ্য হয়ে কিছুটা মেনে নেওয়া গেলেও গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিষয়টি একবিন্দুও মেনে নেওয়া যায় না। তাই অনেক সতর্ক থাকার পরও কিছু ত্রুটি থেকে যায়। এ বিষয়ে আমরা আরও সতর্ক থাকার তাগিদ অনুভব করছি এবং থাকব।
বিসিএস-বিষয়ক অন্যান্য পোস্ট

বিসিএস ৪৬তম (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল ও শুদ্ধীকরণ: প্রশ্ন নং ১ থেকে ৩০

বিসিএস ৪৬তম (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল, শুদ্ধীকরণ ও উত্তর: প্রশ্ন নং ৯১ থেকে ১১৮

Leave a Comment

পট্টি পুরোহিত ঠাঁই এবং ঠায়

ড. মোহাম্মদ আমীন

পট্টি পুরোহিত  ঠাঁই এবং ঠায়

পট্টি

কাপড়পট্টি, শাখারিপট্টি, কামারপট্টি- এখানে বর্ণিত ‘পট্টি’ অর্থ কী? শব্দটির উৎস কী? এখানে বর্ণিত ‘পট্টি’ অর্থ (বিশেষ্যে) একই পণ্যের সারিবদ্ধ দোকানবিশিষ্ট অঞ্চল। যেমন: ফলপট্টি। এটি সংস্কৃত ‘পঙ্‌ক্তি’ থেকে উদ্ভূত খাঁটি বাংলা শব্দ। এছাড়া আরও দুটি পট্টি রয়েছে। একটি সংস্কৃত ‘পট্ট’ থেকে উদ্ভূত খাঁটি বাংলা পট্টি এবং আরেকটি দেশি (সাঁওতাল) পট্টি। সংস্কৃত ‘পট্ট’ থেকে উদ্ভূত খাঁটি বাংলা ‘পট্টি’ অর্থ (বিশেষ্যে) কাপড়ের ছোটো ফালি (জলপট্টি); দেহের ক্ষতস্থান আবৃত রাখার জন্য ব্যবহৃত কাপড়ের লম্বা ফালি, bandage। সব ‘পট্টি’-র উচ্চারণ /পোট্‌টি/। দেশি পট্টি অর্থ (বিশেষ্যে) ধাপ্পা, ফাঁকি। সে একটা পল্টিবাজ, সুযোগ পেলে পল্টি দেবে।
.
ঠাঁই ঠাঁই এবং ঠায়
ঠাঁই: অভিধানে ঠাঁই শব্দের দুটি পৃথক ভুক্তি দেখা যায়। সংস্কৃত স্থান থেকে উদ্ভূত ঠাঁই অর্থ (বিশেষ্যে) স্থান, আশ্রয় ( ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোটো সে তরি, আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।রবীন্দ্রনাথ ); আহারে বসার জায়গা (ঠাঁইয়ে ঠায় বসে খাচ্ছেন দিদা।); থই (এত গভীর জল ঠাঁই পায় না কেউ।) এবং (বিশেষণে) নিকট (আমার ঠাঁইয়ে ঠায় দাড়িয়ে সে, আয় ছুটে আয় যাবি তোরা কে।) বাক্যে অব্যয় হিসেবে ব্যবহৃত ধ্বন্যাত্মক ঠাঁই অর্থ হঠাৎ প্রবল আঘাতের অনুকার শব্দ (সে ঠাঁই করে শিশুটির গালে চড় মেরে দিল।)
ঠায়: সংস্কৃত স্থির হতে উদ্ভূত ঠায় অর্থ (ক্রিয়াবিশেষণে ) স্থির হয়ে (ঠায় দাঁড়িয়ে); কর্মহীন হয়ে, একটানা (ঠায় কতক্ষণ অপেক্ষা করবে?), কাছে, নিকটে (রাস্তার পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে সে)।
.
পুরোহিত শব্দের অর্থ
পুরস্+হিত= পুরোহিত। ‘পুরস্অ’ অর্থ সম্মুখে। ‘হিত’ অর্থ মঙ্গল। অর্থাৎ সম্মুখে অবস্থান করে যিনি মঙ্গলকর্ম সম্পাদন করেন তিনিই পুরোহিত। এটি তৎসম শব্দ। পুরোহিত হবার জন্য প্রয়োজন সঠিক সংস্কার, বেদজ্ঞান,বিধান শাস্ত্রের জ্ঞান, পৌরহিত্যের জ্ঞান ও দক্ষতা। পুরোহিত হচ্ছে সেই ব্যক্তি যাকে ধর্মকার্য সম্পাদনের জন্য যজমান সঠিক বরণ, স্বাগতম ও দক্ষিণার দ্বারা নিযুক্ত করেন।পুরোহিত সকলের অগ্রে উপস্থিত থেকে পূজার সংকল্পবদ্ধ সকল ব্যক্তির অভিলাষকৃত পূজা সম্পন্ন করেন।কোনো ব্যক্তি পূজার আয়োজন করলে তিনি নিজেও পুরোহিত হতে পারেন তবে তার জন্য সঠিক জ্ঞান আবশ্যক।বৈদিক শব্দানুসারে এঁনাদের যাজকও বলা হয়। শব্দটিকে বর্তমানে নানা ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হচ্ছে।যেমন আমি একটি কাজ করার জন্য এক বা একাধিক ব্যক্তিকে নিযুক্ত করতে পারি।তাদের দ্বায়িত্ব আমার সম্ভাষণের মর্যাদা দিয়ে আমার কাজ সম্পাদন করা এক্ষেত্রে এনাদেরও পুরোহিত বলা যাবে।তবে ধর্মীয় ব্যাপার অনেকেই যত্র তত্র এরূপ ব্যবহার ভালো চোখে দেখেন না।

#subach

Leave a Comment

খান: চেঙ্গিস খান, সর্বাধিক মানুষের পিতা: বিশ্বপিতা, সর্বজনীন পিতা, চেঙ্গিস শব্দের অর্থ

ড. মোহাম্মদ আমীন

খান: সর্বাধিক মানুষের পিতা: বিশ্বপিতা, সর্বজনীন পিতা, চেঙ্গিস খান শব্দের অর্থ

খান খান খান এবংখান

 পৃথক ভুক্তিতে ‘খান’ শব্দের চারটি  অর্থ ও উৎস দেখা যায়। যথা: 

ফারসি খান: ফারসি ‘খানাহ’ থেকে উদ্ভূত খান অর্থ (বিশেষ্যে) স্থান (এখান-সেখান; সেখান থেকে চলে এসো)। “এইখানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের

পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.

তলে, তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।”— জসীমউদ্‌দীন। “এই কূলে আমি আর ওই কুলে তুমি মাঝখানে নদী ওই বয়ে চলে যায়।”— রচয়িতা বঙ্কিম ঘোষ। সুরকার ও গায়ক: মান্না দে।

খাঁটি বাংলা খান: সংস্কৃত ‘খণ্ড’ থেকে উদ্ভূত খাঁটি বাংলা ‘খান’ অর্থ (বিশেষ্যে) টুকরো, খণ্ড (ভেঙে খানখান)। (বিশেষণে) সংখ্যানির্দেশক (দুইখান শাড়ি)। হঠাৎ টেবিল থেকে পড়ে তিনখান প্লেট ভেঙে খানখান হয়ে গেল।

তুর্কি খান: তুর্কি ‘খান’ শব্দের আদি অর্থ (বিশেষ্যে) সেনানায়ক, নেতা, শাসক, গোত্রপতি। মঙ্গোলিয়ান ও তুর্কি ভাষায় বংশ প্রধানকে বোঝাতে ‘খান’ শব্দটি ব্যবহৃত হতো। যেমন: চেঙ্গিস খান। বাংলায় এখন সেনানায়ক, নেতা, শাসক কিংবা গোত্রপতি প্রকাশে ‘খান’ ব্যবহৃত হয় না। বাংলায় ‘খান’ শব্দটি পূর্বপুরুষদের পেশা বা অবস্থান বিবেচনায় পদবি হিসেবে নামের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়।  ‘খান’ পদবিনাম ‘ন’ ছাড়া লিখলে বাংলায় ‘খাঁ’ লেখা হয়। ইংরেজিতে অবিকল (Khan) থাকে। নাসিক্যবর্ণ হারালে শব্দ সাধারণত চন্দ্রবিন্দু প্রাপ্ত হয়। যেমন: চন্দ্র থেকে চাঁদ, অংশ থেকে আঁশ…।

বাংলা খান: বাংলা ‘খান’ অর্থ (অনুজ্ঞা) ক্রিয়ায় (সম্ভ্রমে) খাওয়ার অনুজ্ঞা (নাস্তা খান)। তিনি শুধু ডাল দিয়ে ভাত খান। খান সাহবে খুব আফিম খান।

সামগ্রিক প্রয়োগ: ইয়াহিয়া খান সেখান থেকে দুখান ইট নিয়ে ভেঙে খানখান করে বললেন, আপনারা এখন ইটের ওপর বসে ইচ্ছেমতো খান

চেঙ্গিস খান

‘চেঙ্গিস খান’ শব্দের অর্থ কী? চেঙ্গিস খানকে বিশ্বপিতা বা সর্বজনীন পিতা বলা হয় কেন? চেঙ্গিস খানকে ‘বিশ্বপিতা বা সর্বজনীন পিতা’ বলার তথ্যটি সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত নয়। কেউ কেউ তাঁকে বিশ্বপিতা/সর্বজনীন পিতা ( ‘бүх нийтийн аав /bükh niitiin aav/) বলে থাকেন। এটি ব্যক্তিগত বিষয়। তবে তাঁকে সর্বাধিক মানুষের জন্মদাতা’ বলা হয়। পৃথিবীর প্রতি দুইশ মানুষের একজন সরাসরি চেঙ্গিস খানের বংশধর। চেঙ্গিস খান (Genghis Khan) তাঁর জীবদ্দশায় ( জীবনকাল: ১১৬২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১২২৭ খ্রিষ্টাব্দের ৮ই আগস্ট; রাজত্বকাল ১২০৬ – ১২২৭ খ্রিষ্টাব্দ) অসংখ্য সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এর প্রকৃত সংখ্যা কত তা সঠিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি কখনও। বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান কিংবা প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ চেঙ্গিস খানের বংশধর। বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার মানুষের ওপর ক্রোমোজোম/ডিএনএ পরীক্ষা করে এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, পৃথিবীর ০.৫ শতাংশ মানুষ বা প্রতি ২০০ মানুষের একজন চেঙ্গিস খানের সরাসরি বংশধর। বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যা ৮ বিলিয়ন হলে চেঙ্গিস খানের সরাসরি বংশধর কত হয় হিসেবে কষে দেখুন।

‘চেঙ্গিস খান’ ব্যক্তিনাম নয়, এটি উপাধি। যার অর্থ ‘সর্বজনীন শাসক/ বিশাল রাজ্যের অধীশ্বর। ‘চেঙ্গিস’ শব্দটি তুর্কি ‘তেঙ্গিজ ’ থেকে উদ্ভূত। যার অর্থ সমুদ্র, সমুদ্রের মতো বিশাল। ‘খান’ শব্দটির উৎসও ‘তুর্কি’। মঙ্গোলিয়ান ভাষায় বংশ প্রধানকে বোঝাতে ‘খান’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। সুতরাং, চেঙ্গিস খান কথার অর্থ সমুদ্রের মতো বিশাল রাজ্যের অধীশ্বর। আধুনিক বাংলা অভিধানমতে, তুর্কি উৎসের ‘খান’ অর্থ (বিশেষ্যে) পদবিবিশেষ; স্ত্রীবাচক খানম। চেঙ্গিস খান নামে পরিচিত এই বিশ্বজয়ী মোঙ্গল শাসকের জন্মনাম তেমুজিন। তিনি ১১৬২ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন ১২২৭ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান। তাঁকে মঙ্গোল জাতির পিতা বলা হয়ে থাকে। খান হিসেবে অধিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বেই তিনি পূর্ব ও মধ্য এশিয়ার অনেক যাযাবর জাতিগোষ্ঠীকে মঙ্গোল জাতি নামের শ্রেষ্ঠ একটি অদ্বিতীয় জনগোষ্ঠীতে পরিণত করেন।

বিসিএস প্রিলি পরীক্ষা ২০২৪: বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর

 #subach

Leave a Comment

সরণি সারনি স্মরণী স্বরণী স্বরণি- কোনটি শুদ্ধ; শরানে: বড়ো লোকের বেটি লো লম্বা লম্বা চুল: নিমোনিক; স্থান নামের শুদ্ধ বানান

ড. মোহাম্মদ আমীন

সরণি সারনি স্মরণী স্বরণী স্বরণি- কোনটি শুদ্ধ; শরানে: বড়ো লোকের বেটি লো লম্বা লম্বা চুল: নিমোনিক; স্থান নামের শুদ্ধ বানান

সরণি সারনি স্মরণী স্বরণী স্বরণি- কোনটি শুদ্ধ? শব্দটির একমাত্র শুদ্ধ প্রমিত ও ব্যাকরণসম্মত বানান সরণি। সংস্কৃত ‘সরণ (√সৃ+অন)’ শব্দের অর্থ— চলন, গমন, পথ, রাস্তা প্রভৃতি। সরণ থেকে সরণি। প্রসঙ্গত, তৎসম ‘সরণি (সৃ+অনি)’ শব্দের অর্থ পথ, রাস্তা, সড়ক প্রভৃতি। যেমন : বিজয় সরণি, প্রগতি সরণি, সৈয়দ

পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি

নজরুল ইসলাম সরণি, তাজউদ্দীন আহমেদ সরণী প্রভৃতি। কিন্তু অনেকে ‘সরণি’ শব্দকে সরণী, স্মরণী, স্বরণী, স্মরণি, স্বরনি, স্মরনি প্রভৃতি বানানে লিখে থাকেন। এগুলো ভুল। একমাত্র শুদ্ধ বানান ‘সরণি’।

জাতীয় জরিপ অধিদপ্তরে প্রবেশ-পথের সাইনবোর্ডে লেখা হয়েছে— ২৯ তাজউদ্দীন আহমেদ স্মরণী। পল্টন মোড়, বিজয়নগর, মগবাজার রোড, সাত রাস্তা, তেজগাঁও, পুরান ঢাকা, উত্তরা— এককথায ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে শুদ্ধ বানান ‘সরণি’ খুব কম দেখা যায়। শুদ্ধ বানানের পরিবর্তে দেখা যায়— স্বরণী, স্বরণি, স্মরণী, সরণী প্রভৃতি ভুল বানান। কিন্তু কেন এ ভুল? কীভাবে এ ভুলটিকে স্থায়ীভাবে সহজে মনে রাখা যায়?
অনেকে মনে করেন, স্মরণ থেকে স্মরণী। এটি বানান ভুলের একটি কারণ। আর একটি কারণ হচ্ছে, শব্দগুলোর অভিন্ন উচ্চারণ। তবে সবচেয়ে বড়ো কারণ হচ্ছে অভিধান না- দেখা। এ ভুল হতে রক্ষা পাওয়ার একটা কৌশল আছে। দেখুন কৌশলটি কতটুকু কার্যকর। প্রথমে মনে রাখবেন, রাস্তা নামের প্রাসঙ্গিকতায় লেখা সরণ শব্দটি স্মরণ থেকে নয় ‘সরা’ থেকে এসেছে। সরা শব্দের অর্থ স্থান বদলানো। রাস্তায় পথিককে সরে সরে এগুতে হয়। তাই রাস্তার নাম লেখায় সরণি। শব্দটি সংস্কৃত হওয়ায় ণত্ব বিধি অনুসারে মূর্ধন্য-ণ হয়েছে। যদি কষ্ট হয় তো, অতসব না-ভেবে শুধু মনে রাখুন ‘সরা’ থেকে ‘সরণি’।

শরানে শব্দের অর্থ

“ওরে লাল ধুলোর শরানে ওরে শরানে
ভালোবাসা দাড়িন ছিল মাথার সিঁথেনে”
এখানে শরানে শব্দের অর্থ কী?
কথাগুলো রতন কাহার-এর ‘বড়ো লোকের বিটি লো লম্বা লম্বা চুল’ গানের দুটি পঙ্‌ক্তি। এখনে বর্ণিত শরান শব্দটি সরণি (উচ্চারণ শরোনি) শব্দের আঞ্চলিক-কাব্যিক-কোমল রূপ। তৎসম সরণ শব্দের অর্থ পথ, রাস্তা। সমার্থক সরণি। যেমন: তাজউদ্দিন সরণি- – -। গানে বর্ণিত শরানে শব্দের অর্থ— পথে, রাস্তায়। পশ্চিমবঙ্গে এবং বাংলাদেশের কিছু কিছু আদিবাসীর মধ্যে শব্দটির ব্যবহার দেখা যায়। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নাগিনী কন্যার কাহিনী’ উপন্যাসে পরিবেশিত বেদেদের গানে শরান শব্দটির উপস্থিতি বেশ হৃদয়গ্রাহী মমতায় বর্ণিত—
“ও তুই যেতে শরানে, 
ধাক্কা লেগেছে পরানে।”

স্থান নামের শুদ্ধ বানান

সরণি (বিজয় সরণি)।
চত্বর (দোয়েল চত্বর, শাপলা চত্বর)।
গুলিস্তান (স্থান, গুলিস্তান সিনেমা হলের নামানুসারে)।
কারওয়ান বাজার (অপভ্রংশে কাওরান বাজার নামও প্রচলিত)।
আফগানিস্তান, পাকিস্তান, কিন্তু হিন্দুস্থান (স্থান তৎসম, স্তান বিদেশি)।
সূত্র: নিমোনিক প্রমিত বাংলা বানান অভিধান, ড. মোহাম্মদ আমীন, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.

Leave a Comment

সর্বশেষ সংশোধিত বাংলা শব্দের তালিকা: প্রাত্যহিক ব্যবহৃত অশুদ্ধ শব্দের শুদ্ধ রূপ/৬

ড. মোহাম্মদ আমীন

সর্বশেষ সংশোধিত বাংলা শব্দের তালিকা: প্রাত্যহিক ব্যবহৃত অশুদ্ধ শব্দের শুদ্ধ রূপ/৬

অশুদ্ধ--------শুদ্ধ

৬০১. সন্মুখ – সম্মুখ
৬০২. সন্মেলন – সম্মেলন
৬০৩. সমীচিন – সমীচীন
৬০৪. সম্বরণ – সংবরণ
৬০৫. সম্বর্ধনা – সংবর্ধনা

৬০৬. সম্বলিত – সংবলিত
৬০৭. সরকারী – সরকারি
৬০৮. সরণী – সরণি
৬০৯. সরনী – সরণি
৬১০. সর্বাঙ্গীন – সর্বাঙ্গীণ

৬১১. সলজ্জিত – সলজ্জ
৬১২. সশংকিত – সশঙ্ক
৬১৩ সহকারি – সহকারী
৬১৪. সাংগ – সাঙ্গ
৬১৫. সাক্ষাতকার – সাক্ষাৎকার

৬১৬. সাড়াশী – সাঁড়াশি
৬১৭. সাধারন – সাধারণ
৬১৮. সান্তনা – সান্ত্বনা
৬১৯. সামগ্রীক – সামগ্রিক
৬২০. সৌখিন – শৌখিন

৬২১. স্বচ্ছল – সচ্ছল
৬২২. স্বরস্বতী – সরস্বতী
৬২৩. স্বস্ত্রীক – সস্ত্রীক
৬২৪. স্বাতন্ত্র – স্বাতন্ত্র্য
৬২৫ স্বাধীকার – স্বাধিকার

৬২৬. স্বায়ত্ত্বশাসন – স্বায়ত্তশাসন
৬২৭. স্মরন – স্মরণ
৬২৮. স্রোতঃস্বতী – স্রোতস্বতী
৬২৯. হীনমন্যতা – হীনম্মন্যতা
৬৩০. হৃদপিণ্ড – হৃৎপিণ্ড

৬৩১. হৃদস্পন্দন – হৃৎস্পন্দন
৬৩২. হৃৎরোগ – হৃদরোগ

সর্বশেষ সংশোধিত বাংলা শব্দের তালিকা: প্রাত্যহিক ব্যবহৃত অশুদ্ধ শব্দের শুদ্ধ রূপ/১

সর্বশেষ সংশোধিত বাংলা শব্দের তালিকা: প্রাত্যহিক ব্যবহৃত অশুদ্ধ শব্দের শুদ্ধ রূপ/২

সর্বশেষ সংশোধিত বাংলা শব্দের তালিকা: প্রাত্যহিক ব্যবহৃত অশুদ্ধ শব্দের শুদ্ধ রূপ/৩

সর্বশেষ সংশোধিত বাংলা শব্দের তালিকা: প্রাত্যহিক ব্যবহৃত অশুদ্ধ শব্দের শুদ্ধ রূপ/৪

সর্বশেষ সংশোধিত বাংলা শব্দের তালিকা: প্রাত্যহিক ব্যবহৃত অশুদ্ধ শব্দের শুদ্ধ রূপ/৫

 


এরকম সব শব্দ একসঙ্গে পাওয়া যাবে নিচের গ্রন্থে:
সর্বশেষ সংশোধিত বাংলা শব্দের তালিকা, ড. মোহাম্মদ আমীন,
প্রকাশক: শুবাচ রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন্স। মূল্য: ২৫০ টাকা। যোগাযোগ:
এম এ কবীর: ০১৭১২২৩০০৪৩, ০১৮১৯১৪০৯২৮
এবি ছিদ্দিক: ০১৫১৬ ৭০৬৫৬৮, ০১৭১২ ২৩০০৪৩।
তুষার প্রসূন: ০১৭৪৭ ৬৭০৫০২

Leave a Comment

You cannot copy content of this page